দিল্লি জয়ের পর তীরে এসে ৩০ রানে সিরিজ খোয়ালো টাইগাররা

তীরে এসে তরী ডুবাল টাইগাররা।নাইম যেভাবে খেলছিলেন নাগপুরে, জয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন ষোলো কোটি বাঙালি। কিন্তু পারেননি জয়ের বন্দর পর্যন্ত নিয়ে যেতে।
ব্যক্তিগত ৮১ রানে দলীয় ১২৬ রানে শিবমান দুবের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। 
 শুরুটা যেভাবে হওয়ার দরকার ছিল তা করতে পারেননি লিটন দাস। সৌম সরকারও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিলেন। মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে ৯৮ রানের জুটি গড়ে আশা দেখিয়েছিলেন নাঈম শেখ। ৮১ রানের ইনিংস খেলে লড়াইয়ে রেখেছিলেন বাংলাদেশকে। কিন্তু অভিজ্ঞ মুশফিক, মাহামুদুল্লাহর যোগ্য সহায়তার অভাবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ৩০ রানে। হ্যাটট্রিক করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন দিপক চাহাল। ৩.২ ওভাওে সাত রানে ছয় উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। দিল্লি জয়ের পর টাইগারদের সিরিজ হারতে হয়েছে ২-১ ব্যবধানে।
১৭৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমেই তৃতীয় ওভারে জোড়া আঘাত হানেন দিপক চাহাল। দলীয় ১২ রানে লিটন দাসের বিদায়ের পরের বলেই সাজঘরে ফেরেন সৌম সরকার। নাঈম শেখের সঙ্গে ৯৮ রানে জুটি গড়ে দলীয় ১১০ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মোহাম্মদ মিঠুন। ১১০ রানেই আউট হন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম। দলীয় ১২৬ রানে ৮১ রান করে আউট হন নাঈম শেখ। পরের বলেই সাজঘরে ফেরেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। আশা যাওয়ার এই মিছিলেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
ম্যাচটি হারলেও নাঈম শেখ ভারতকে ভালোই ভুগিয়েছেন। মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ৯৮ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন এই ওপেনার। 
টাইগারদের হয়ে একাই লড়ছেন নাইম
ভারতের বিপক্ষে মোহাম্মদ নাইম একাই লড়াই করছেন। ১৭৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১২ রানেই জোড়া উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। মিথুনকে সঙ্গে নিয়ে নাইম ৯৮ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যান চালকের আসনে। মিথুন ২৭ বল খেলে আউট হয়ে গেলে ভাঙে ৯৮ রানের জুটি। তারপরে মাঠে নেমে ০ রানেই ফিরে যান মুশফিক। 
ক্যাচ মিসের মহড়ায় কঠিন লক্ষ্যের সামনে বাংলাদেশ
নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন মাঠে গড় রান ১৪০-১৫০। সর্বশেষ ১৫ ম্যাচে ১৫০ রানের বেশি করতে পারেনি কোনো দল। এই মাঠেই টস হেরে আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে ১৭৫ রানের টার্গেট দেয় ভারত। স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন স্রেয়স আইয়ার। তার ব্যাট থেকে আসে ৬২ রান। এ ছাড়া ৫২ রান করেন লোকেশ রাহুল। টাইগারদের হয়ে দুই উইকেট করে নেন সৌম্য ও শফিউল। 
বিপ্লবের ভুলের মাশুল দিলো বাংলাদেশ
স্রেয়স আইয়ার ফিরে যেতে পারতেন একেবারে খালি হাতেই। কিন্তু তিনিই এখন টাইগার বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করছেন। শফিউলের বলে রোহিত আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসেই ক্যাচ তুলে দেন স্রেয়স। কিন্তু ধরতে ব্যর্থ হন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এই স্রেয়স আফিফ হোসেনকে তিন ছয় মেরে মাত্র ২৭ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি করেন। 
সৌম্যর জোড়া উইকেট 
১৭তম ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে ভারতের ঝড় থামান সৌম্য সরকার। ওভারের প্রথম বলেই ঋষভ পান্থকে আউট করার পর পঞ্চম বলে সাজঘরে পাঠান ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরি করা স্রেয়স আইয়ারকে। সৌম্য চার ওভার বোলিং করে ২৯ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন।
স্বস্তি এনে দিলেন আল-আমিন
শুরুতেই দুই ওপেনার ফিরে গেলেও ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভয়ংকর হতে থাকেন লোকেশ রাহুল। হাফসেঞ্চুরি করে দলকে বড় ইনিংস গড়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে অর্ধশতকের পর বেশিদূর এগোতে পারেননি। আল আমিনের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ক্যাচ তুলে লিটনের হাতে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরেন। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ বলে ৫২ রান।
শফিউলের জোড়া আঘতা
রোহিত আউট হয়ে গেলেও ধাওয়ানের ব্যাট চওড়া হয়। মোস্তাফিজকে দুই চার মেরে বার্তা দেন ঝোড়ো ইনিংসের। কিন্তু পারেননি। থামিয়ে দিলেন শফিউল। ব্যক্তিগত ১৯ রানে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লার হাতে। 
রোহিতের স্টাম্প তুলে নিলেন শফিউল 
ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা যে কতটা ভয়ংকর তা আগের ম্যাচে টের পেয়েছেন শফিউল-মোস্তাফিজরা। এবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে রোহিতকে দাঁড়াতেই দেননি শফিউল ইসলাম। ইনিংসের দ্বিতীয় এবং নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে রোহিতের স্টাম্প তুলে তাকে সাজঘরে পাঠান। গত ম্যাচে ৮৫ রান করলেও এই ম্যাচে মাত্র দুই রান করেন। 
ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ 
ভারতের সঙ্গে দেখা হলেই যেন ভাগ্যদেবি মুখ ফিরিয়ে নেন লাল সবুজের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে। তা না হলে জয়ের খুব কাছে গিয়েও হারের দুঃখ নিয়ে ফিরতে হতো না।
নিদাহাস ট্রফি আর এশিয়া কাপের ফাইনালের পর ভারতের বিপক্ষে তৃতীয়বারের মতো ট্রফি জয়ের জন্য লড়াই করবে টাইগাররা।  ট্রফির লড়াইয়ে খেলতে নেমে টস জিতে ফিল্ডিং করছে বাংলাদেশ।
আজ রোববার নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ম্যাচটি শুরু হবে। আগের দুই ম্যাচের একাদশে থাকা মোসাদ্দেক বাদ পড়েছেন।  প্রথমবার মতো এই সিরিজে একাদশে সুযোগ পেয়েছেন মোহাম্মদ মিথুন।
এদিকে ভারতও নেমেছে এক পরিবর্তন নিয়ে। একাদশে জায়গা হারিয়েছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। তার পরিবর্তে একাদশে এসেছেন মানিশ পান্ডে।
বাংলাদেশ একাদশ : লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), মোসাদ্দেক হোসেন, আফিফ হোসেন ধ্রুব, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মুস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন, শফিউল ইসলাম।
ভারত  একাদশ : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ার, ঋশাভ পান্ত (উইকেটরক্ষক), শিভাম দাবে, মানিশ পান্ডে, ওয়াশিংটন সুন্দর, যুজবেন্দ্র চাহাল, দীপক চাহার, খলিল আহমেদ।
 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.