গ্রামের মানুষকে মেরে ফেলতে পাঁচ নলকূপে বিষ দিলেন এক নারী । দৈনিক জাতীয় খবর




গ্রামের মানুষকে মেরে ফেলতে পাঁচ নলকূপে বিষ দিলেন এক নারী
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিবেদক :
গ্রামের মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নলকূপসহ আশপাশ বাড়িঘরের পাঁচটি নলকূপে বিষ ঢেলে দিলেন এক ক্ষুব্ধ নারী। এতে গ্রামের সেই পাঁচ নলকূপের পানি পান থেকে বিরত রয়েছেন গ্রামবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামে শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
শাখাইতি গ্রামের ইউপি সদস্য সুমন মুন্সি বলেন, গ্রামের প্রবাসী অহেদ মিয়ার স্ত্রী আনেছা বেগম ও তার ছেলে জীবন মিয়া শাখাইতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের নলকূপ ও গ্রামের নজরুল মিয়ার বাড়ি, শামসু মিয়ার বাড়ি, রমিজ মিয়ার বাড়ি ও রিপন মিয়ার বাড়ির নলকূপে বিষ ঢেলে দেয় এই মা ও ছেলে মিলে। এসময় নজরুল মিয়ার স্ত্রী নলকূপে বিষ ঢালার দৃশ্য দেখে সুর-চিৎকার করলে গ্রামবাসী বিষসহ মা ও ছেলেকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়।
Image may contain: 1 person, text
ইউপি সদস্য আরও বলেন, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল হক খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি সব দেখে গেছেন। গ্রামবাসীর হাতে আটক অভিযুক্ত মা ও ছেলেকে তিনি জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস দেখিয়ে তিনি তাদের থানায় নেননি। যদিও আমি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা দিতে চেয়েছিলাম।
পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান দ্বীন ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রামের লোকদের ওপর প্রতিশোধ নিতেই আনেছা বেগম নামে ওই নারী এ কাজ করে থাকতে পারেন। কারণ হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, কিছুদিন আগে এই নারী নিজের বসতঘরে মাটি দিয়ে কবর বানিয়ে সেটাকে গায়েবি কবর প্রচার করে লোকসমাগম করেন। অনেকে সেই কবরে মোমবাতি, নগদ টাকা ফেলে সেজদা দিতে শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে গ্রামের লোকদের সহায়তায় সেই কথিত অলৌকিক কবর ভেঙে দেয়। ওই সময় পুলিশ এই নারীকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল। কিন্তু গ্রামবাসী থাকে বাঁচিয়ে অন্যত্র সরিয়ে দেয়। শুক্রবার এ নারী গ্রামে ফিরে বিভিন্ন নলকূপে বিষ ঢেলে এ কাণ্ডকীর্তি ঘটিয়েছে। পুলিশ গিয়েছিল, পরে কি হয়েছে আমার জানা নেই।
এদিকে শাখাইতি গ্রামে আনেছা বেগমের বাড়িতে খোঁজ করলে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশী লোকজন জানান, গ্রামের স্কুলসহ পাঁচ বাড়িতে নলকূপে বিষ ঢালার পর গ্রামবাসীর হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ফের এই নারী ও তার ছেলে গাঢাকা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল হক বলেন, আমি করোনা ডিউটিতে সেইসময় পানিশ্বর বাজার এলাকায় ছিলাম। ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি গ্রামের লোকজন ওই মহিলাকে আটকে রেখেছে। গ্রামের লোকদের দাবি, এই মহিলা পাঁচটি নলকূপে বিষ দিয়েছে। আমি নলকূপগুলো থেকে বিষের গন্ধ পেয়েছি। করোনা পরিস্থিতি ও নানা কারণে সেই মহিলাকে থানায় আনিনি।
এ বিষয়ে থানায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না? জানতে চাইলে, জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, লিখিত কিছু করা হয়নি, তবে থানার অফিসার ইনচার্জ এ বিষয়ে অবগত আছেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.