পুলিশই জনগণের আসল বন্ধু, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রূপসা থানার ওসি মোল্লা জাকির হোসেন

পুলিশই জনগণের আসল বন্ধু, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রূপসা থানার ওসি মোল্লা জাকির হোসেন

Image may contain: 1 person


নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশই জনগণের আসব ন্ধু, তারই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা জাকির হোসেন। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নানাবিধ সামজিক ও মানবিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে ক্লান্তিহীনভাবে পথ চলছেন তিনি।
রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা জাকির হোসেন সাধারণ মানুষের সামজিক নিরাপত্তা প্রদানসহ করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে থানার অন্যান্য অফিসারদের নিয়ে প্রতিনিয়ত ছুটছেন থানা এলাকার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে।
জন সমাগম এড়াতে কখনো সড়কে সড়কে টহল ও চেকপোষ্ট পরিচালনা, কখনো হাটবাজার মনিটরিং আবার কখনো করোনায় ঝুঁকিপুর্ণ এলাকা লকডাউন ঘোষণা করছেন। সেইসাথে বিদেশসহ অন্যান্য জেলা থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিদের বাড়ি চিহ্নিত করে লাল পতাকা টানাচ্ছেন।
সাধারণ মানুষদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাতে অকারণে বাইরে ঘোরাফেরা না করে তার জন্য চালাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। খবর পেলেই বিতরণ করছেন অসহায় ব্যক্তিদের খাদ্য সামগ্রি এবং স্বাস্থ্য সচেতনতায় মাস্ক। এসমস্ত কর্মকান্ড তিনি নিজে উপস্থিত থেকেই পরিচালনা করছেন।
তার তত্বাবধানে পূর্ব রূপসা ঘাটের মস্তিস্ক বিকৃত ও প্রতিবন্ধীদের তিন বেলা খাবার বিতরণ করছেন পূর্ব রূপসা বাসস্টান্ড পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. আমিরুল ইসলাম।
তিনি এ থানা এলাকার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুকিপুর্ণ নৈহাটী ইউনিয়নের পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড, পূর্ব রূপসা ঘাট এবং আইচগাতী ইউনিয়নের করোনা ঝুকিপুর্ণ রাজাপুর এবং দেয়াড়া এলাকায় টহল ব্যাবস্থা জোরদার করেছেন।
এমনকি উপজেলার দেয়াড়া গ্রামে করোনায় মৃত জরিনার লাশ দাফনে তিনি ছুটে যান গভীর রাতে।
নিজের জীবনকে তুচ্ছ করেই পুলিশ অফিসার মোল্লা জাকির হোসেনের এ সকল কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষের মাঝে পড়েছে ব্যাপক সাড়া। পুলিশ জনগণের বন্ধু তার দৃষ্টান্ত স্থাপনে ইতোমধ্যে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে করোনার ভয়ংকর থাবা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যার কারণে এই করোনা প্রতিরোধ এবং জনগনের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে খুলনা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে রূপসা থানা পুলিশের প্রতিটা অফিসার ও সদস্যসহ এই মাহে রমজানেও আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি। দক্ষিণাঞ্চলের সব থেকে গুরুত্বপূর্ন পারাপারের স্থান হচ্ছে পূর্র রূপসা ঘাট। এখানে বাসস্ট্যান্ড আছে, শহরের সাথে যোগাযোগের জন্য শত শত লোক আসা-যাওয়া করে। নৌপুলিশসহ আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
পাশাপাশি এখানে বিভিন্ন রকম শ্রমিক, বাস মালিক, মটরশ্রমিক, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক, ভ্যান-রিকসা ও নৌ-শ্রমিকের আনাগোনা বেশি। যে কারণে আমরা বিশেষ নজরদারি করি এই বাসস্ট্যান্ড ও ঘাটে। যার অংশ হিসেবে আজও আমরা সেই কাজ করে যাচ্ছি। শুধু তাই নয়, কয়েকদিন আগে আইচগাতির দেয়াড়া গ্রামে জরিনা নামে একজন নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করে। সেখানে মেম্বর, চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের কেউ যখন এগিয়ে আসেনি, তখন মাননীয় পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই গভীর রাতেই আমরা রূপসা থানা পুলিশ সেখানে ছুটে যায়। ওই রাতে সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ও গিয়েছিলেন। এমনকি আমি নিজেই সেখানে গিয়ে বাঁশ কাটি, কবর খোড়ার কাজে সহায়তা করি এবং ফজরের নামাজের আগেই তার জানাযা ও দাফন সম্পন্ন করি।
তিনি আরো বলেন, এছাড়া জন সচেতনতা থেকে শুরু করে সেবাদানের যতগুলো পর্যায় আছে তার সবগুলো ইনশাল্লাহ আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের মাননীয় আইজিপি, রেঞ্জ ডিআজি মহোদয় ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে আমরা প্রতিটা সদস্য প্রত্যন্ত এলাকার যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সদা তৎপর রযেছি। শুধু তাইনা, করোনা পরিস্থিতিতে ত্রানের ব্যাপারেও আমরা সার্বক্ষনিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি। কেউ খাদ্য সংকটে পড়েছে মর্মে আমাদের কাছে খবর আসার সাথে সাথে আমরা সেখানে ছুটে গিয়ে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করছি।
এই পূর্ব রূপসা ঘাটে বাসস্ট্যাান্ড এলাকার, মস্তিস্কবিকৃত ও প্রতিবন্ধীদের মুখে তিন বেলা রান্না করে খাবার তুলে দেয়া হচ্ছে। মাননীয় পুলিশ সুপারের নির্দেশনাক্রমে ও আমার সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ কাজটি নিয়মিত করে চলেছেন আমাদের পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আমিরুল ইসলাম। আমরা নিরন্তনভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিভাবে জনসাধারণদের ভালো রাখা যায়, সুস্থ রাখা যায়। এপর্যন্ত বিদেশসহ অন্যান্য জেলা থেকে আসা এপর্যন্ত ৮৬ জন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাদের বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেছি। পাশাপাশি হাট-বাজারগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং এবং সামজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, খুলনা-৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য প্রতিনিয়ত আমাদের কর্মকান্ড দেখভাল করছেন। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় প্রতিনিয়ত খাদ্য সহায়তা প্রদান করে আসছেন। তার ধারবাহিকতায় এই মাহে রমজানে কার্ডের মাধ্যমে প্রতিদিন শুধু ঘাট এলাকার হতদরিদ্র ৫০ জনকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন।
সর্বপরি তিনি জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। নিজে সুস্থ থাকুন, অপরকে সুস্থ রাখুন। আপনাদের আশে-পাশে করোনা সংক্রমনের খবর জানতে পারলে আমাদের জানান। আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নেবো। যতদিন করোনা নির্মুল না হবে ততদিন আমাদের এই কর্মকান্ড চলমান থাকবে।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.