শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় প্রেমিকের বিয়ের সংবাদ শুনে প্রেমিকার বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা। বুধবার (৫ ফেব্রæয়ারি) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের জয় বাংলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় প্রেমিকাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে। মেয়েটির পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের হাওলাদার কান্দি গ্রামের আইয়ুব আলী হাওলাদারের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৮) সঙ্গে জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের মৃধাকান্দি (চিটার চর) গ্রামের ঊনিশ বছরের এক কিশোরির ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে মোবাইলে রং নম্বরে প্রথম বন্ধুত্ব, পরে দেখা সাক্ষাতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকবার সাইফুল ঐ কিশোরীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কও করে। হঠাৎ প্রেমিকাকে রেখে পাশের গ্রামের আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করেছে সাইফুল। বিয়ের সংবাদ শুনে প্রেমিকা প্রেমিক সাইফুলকে মোবাইলে ফোন দেয়। বিয়ের বিষয় নিয়ে তাদের গতকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রæয়ারি) রাতে মোবাইলে বাকবিতন্ডা হয়। পরে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রেমিকা বাড়ি থেকে জয় বাংলা বাজারে গিয়ে সাইফুলের খাবার হোটেলের সামনে গিয়ে বিষ পান করে এবং প্রেমিকের গায়ে ঢলে পরে। অসুস্থ হয়ে পরলে সাইফুল পালিয়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। প্রেমিকা বলেন, সাইফুলের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক । বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকবার আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করেছে সাইফুল। কিন্তু গতকাল জানতে পারি আমাকে রেখে সাইফুল তার গ্রামের একটি মেয়েকে বিয়ে করছে। বিয়ের সংবাদ শুনে (মঙ্গলবার) রাতে আমি সাইফুলকে মোবাইলে ফোন দেই। আমাকে বিয়ে করতে হবে বললে, সে অস্বীকার করে। আমাকে গালিগালাজ করে। আর বলে তুই মরে যা, আমাকে মুক্তি দে। তিনি আরও বলেন, বিয়ে করবে বলে সাইফুল আমার কাছ থেকে নগদ ও স্বর্ণ লাগিয়ে এক লাখ টাকা নিয়েছে। টাকা ও স্বর্ণের জন্য বাবা-মা আমাকে প্রতিদিন বকে। প্রেমিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে এবং তার মোবাইলে ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জয় বাংলা বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী আফজাল কবিরাজ বলেন, সকালে বাজারে দোকান করছি। হঠাৎ দেখি আমার পাশের দোকানের মালিক সাইফুলের গায়ের ওপর একটি মেয়ে ঢলে পরছে। পরে সাইফুল তাৎক্ষনিক পালিয়ে যায়। মেয়েটি অসুস্থ অবস্থায় মাটিতে পরে গেলে আমরা কয়েকজন মিলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইসরাত রিজোয়ানা বলেন, মেয়েটি বিষ পান করে আমাদের হাসপাতালে আসে। আমরা তাকে চিকিৎসা দিয়েছি। তিনি এখন অনেকটা সুস্থ আছেন। জাতীয় মহিলা সংস্থা শরীয়তপুরের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রওশন আরা বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক করবে, টাকা-স্বর্ণ লুটে নেবে এটা মেনে নেয়া যায় না। ছেলেটি মেয়েটির সাথে প্রতারণা করেছে। মেয়েটি আইনের আশ্রায় চাইলে আমরা পাশে আছি। নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টা আমি শুনলাম । কেউ অভিযোগ করতে আসলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই