কলা গাছের বাকল থেকে সূতা বা ফাইবার তৈরি । দৈনিক জাতীয় খবর
কলা গাছের বাকল থেকে সূতা বা ফাইবার তৈরি
কলাগাছের আদি নিবাস দক্ষিন-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। ভারতবর্ষে তার আগমন খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ অব্দে।তবে এই গাছ এখন বাংলার নিজস্ব ঐতিহ্য।
সুতা বা ফাইবার তৈরীঃ কলা গাছ থেকে সারা বছরই ভালো ফলন পাওয়া যায়। সমতল ও পাহাড়ি অঞ্চলে সময়ের সাথে সাথে বাণিজ্যিক ভাবেও৷ বর্তমানে কলার উৎপাদন বেড়েছে। কলা গাছের বিকল্প কোন ব্যবহার না থাকার কারণে কলার ছড়া কাটার পর কলা গাছও কেটে ফেলা হতো। তবে বর্তমান সময়ে পরিত্যাক্ত কলার বাকল থেকে উৎপাদিত হচ্ছে ভালোমানের ফাইবার বা সুতা। একটি কলা গাছের বাকল থেকে কম করে হলেও ২০০গ্রাম সুতা উৎপাদন করা যায়। আনন্দ বিল্ডিং কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ অফ স্মল হোল্ডারস্ ইন বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা ইতোমধ্যেই খাগড়াছড়িতে কলা গাছ থেকে সুতা তৈরির প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছে। ওয়েষ্ট অ্যাগ্রো এই প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে এবং জার্মান
দাতা সংস্থা ওয়েলথ হাঙ্গার হিলফের অর্থায়নে প্রকল্পটির বাস্তবায়নের কাজ চলছে। প্রকল্পের শুরুতে বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের কারনে সুতা তৈরির কিছুটা ধীরগতি ছিল।
বর্তমানে লালমনিরহাট, জয়পুরহাট, মিঠাপুকুর, যশোর, টাংগাইল,খাগড়াছড়ি, ঠাকুরগাঁও সদরসহ দেশের সাত স্থানে কলাগাছ থেকে সুতা উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বিশেষ প্রক্রিয়ায় যন্ত্রের সাহায্যে বাকল থেকে আঁশ বের করে আনা হয়।সেই আঁশ
করে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় তুলার রোল।এরপর স্পিনিং মেশিনে দিয়ে তৈরি করা হয় সুতা।সেই সুতাতেই তাঁতের সাহায্যে কাপড় তৈরি করা হয়। কাপড়ের মান ভালো হলে কানাডাসহ আরও বেশকিছু দেশে এই কাপড় রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা যায়।
কলা গাছের বাকল থেকে তৈরীকৃত সুতা টেকসই ও মানসম্পন্ন।জুট বা কটনের সাথে মিশ্রনের পরে এটি আরও টেকসই হয়।যা দিয়ে পেপার,হ্যান্ডিক্রাফট,হ্যান্ডব্যাগ,দড়ি,শৌখিন জিনিসপত্র ও তাঁবু বানানোর জন্য উৎকৃষ্ট মানের সুতা বানানো যায়।কলার বাকল থেকে ফাইবার অংশ সংরক্ষণের পর অবশিষ্ট অংশ থেকে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করা যায়। যার প্রতি কেজি মূল্য প্রায় ২০ টাকা।
কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির
১.এটি টেকসই ও মানসম্পন্ন
২.কাঁচামাল সহজলভ্য
৩.কম খরচে সুতা তৈরি করা যায়
৪.শ্রমিকমূল্য তুলনামূলক কম
৫.প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে এটি বেশি শক্ত
৬.আর্দ্রতা ধরে রাখা এবং ত্যাগ করার ক্ষমতা অনেক বেশি।
৭.কৃত্রিম তন্তুর বিকল্প হিসেবে এর ব্যবহার করা যায়।
সুবিধাঃ এর মাধ্যমে শতভাগ রাসায়নিক দ্রব্যমুক্ত কাগজ ও কাপড় বানানো সম্ভব,যা ৭০০ গুণ বেশি দীর্ঘস্হায়ী। এই প্রকল্পটির নাম করা হয়েছে “বানানা বিউটি বাংলাদেশ” সরকারি সহযোগিতা পেলে অদূর ভবিষ্যতে এ শিল্পকে আরো এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
কোন মন্তব্য নেই